রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:২২ অপরাহ্ন

সারাদেশে টাইফয়েড টিকাদান কার্যক্রম শুরু

ছবি: সংগৃহীত

অনলাইন ডেস্ক:: প্রথমবারের মতো দেশে টাইফয়েড টিকাদান কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে। মাসব্যাপী চলমান এই ক্যাম্পেইনে টিকা দেওয়া হবে প্রায় ৫ কোটি শিশুকে, যাদের বয়স ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের মধ্যে।

রোববার (১২ অেক্টাবর) থেকে শুরু হচ্ছে এই টিকাদান কার্যক্রম। সরকার কর্তৃক সারাদেশের শিশু-কিশোরদের বিনামূল্যেই এই টিকা দেওয়া হবে।

এর আগে শিশুদের টিকার জন্য সরকারের নির্ধারিত ভ্যাকসিন নিবন্ধন পোর্টালে আবেদন করতে বলা হয়েছিল। তবে যারা আবেদন করেনি কিংবা জন্ম নিবন্ধন নেই, নিয়মিত টিকা কেন্দ্রে গিয়ে তারাও টাইফয়েড টিকা দিতে পারবে বলে নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, এই টিকাটি তৈরি করেছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট। সরকার এই টিকা পেয়েছে টিকাবিষয়ক আন্তর্জাতিক মঞ্চ গ্যাভির কাছ থেকে। এরই মধ্যে নেপাল, পাকিস্তানসহ আরও ৮টি দেশে এই টিকা দেওয়া হয়েছে।

এই টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কি না- জানতে চাইলে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে) অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘টিকাটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত। এটি নিরাপদ।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, এরই মধ্যে ১ কোটি ৬৮ লাখ শিশু টিকার জন্য নিবন্ধন করেছে। এই নিবন্ধন অব্যাহত আছে। যেসব শিশুর জন্মসনদ নেই বা জন্মনিবন্ধন হয়নি, তাদের জন্যও টিকার নিবন্ধন করা যাবে। এর জন্য নিকটস্থ টিকাকেন্দ্রের স্বাস্থ্যকর্মীদের সহায়তা নিতে হবে। টিকা গ্রহণের জন্য অভিভাবকদের https://vaxepi.gov.bd/registration/tcv ওয়েবসাইটে গিয়ে ১৭ সংখ্যার জন্ম-নিবন্ধন নম্বর দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। ১ আগস্ট থেকে নিবন্ধন শুরু হয়েছে। নিবন্ধনের পর জন্ম নিবন্ধন সনদ ব্যবহার করে সরাসরি ভ্যাকসিন কার্ড ডাউনলোড করা যাবে।

এদিকে ইপিআই (সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি) প্রোগ্রামের ম্যানেজার ডা. আবুল ফজল মো. শাহাবুদ্দিন খান জানান, ১২ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই ক্যাম্পেইনের প্রথম ১০ দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবং পরবর্তীতে ইপিআই সেন্টারে এই টিকা দেওয়া হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টিকাদান চলবে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত। এর বাইরেও বাড়ি বাড়ি গিয়ে ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী সব শিশুকেই এই টিকা দেওয়া হবে। শহর এলাকার পথশিশুদেরও টিকা দেবে বিভিন্ন এনজিও।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৯ সালের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর বিশ্বে প্রায় ৯০ লাখ মানুষ টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হন। এর মধ্যে মারা যান ১ লাখের বেশি মানুষ। আমাদের দেশেও টাইফয়েডে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা দিনে দিনে বেড়েই চলেছে।

এছাড়া দ্যা গ্লোবাল বারডেন অব ডিজিজ এর সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০২১ সালে বাংলাদেশে প্রায় ৪ লাখ ৭৮ হাজার মানুষ টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হন এবং মারা যান ৮ হাজার। যার মধ্যে ৬৮ শতাংশই ছিল শিশু।

উল্লেখ্য, টাইফয়েড ব্যাকটেরিয়া সৃষ্ট একটি সংক্রামক রোগ, যা প্রতিরোধযোগ্য। তবে, এতে আক্রান্ত হলে আর্থিক ক্ষতি, দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক জটিলতা এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com